জমিদারের জমিদারিত্ব নেই আছে শুধু জমিদারের ইতিহাসের সাক্ষী । বালিয়াটি জমিদার বাড়ি এবং পাকুটিয়া জমিদার বাড়ির পরতে পরতে রয়েছে কালের নিদর্শন ।
জমিদার বাড়ির অপূর্ব কারুকার্য খচিত বিশাল ভবন। দেয়ালের পরতে পরতে রয়েছে সৌন্দর্যের ছোঁয়া দিয়ে সাজানো ছবির মতন।
পুরনো ঐতিজ্যপুর্ণ যায়গায় ঘুরার অনুভূতিটাই অন্যরকম। পুরনো ইতিহাস, নিজেদের অতীত জানা যায় এর দ্বারা। এমনই ঐতিহ্যেঘেরা যায়গা হচ্ছে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি ও পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি। দুটো জমিদার বাড়িই খুব কাছাকাছি হওয়ায় একদিনেই ঘুরে আসা যাবে উভয়টি।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ির ইতিহাস : বালিয়াটি প্রাসাদ। বাংলাদেশে খ্রিস্টীয় উনিশ শতকের একটি অপূর্ব নিদর্শন বালিয়াটি প্রাসাদ। বালিয়াটির জমিদার গােবিন্দ রাম সাহা ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন খ্রিস্টীয় আঠার শতকের মাঝামাঝি সময় পর্বের একজন বড় মাপের লবণ ব্যবসায়ী। দধী রাম,পণ্ডিত রাম, আনন্দ রাম এবং গােলাপ রাম নামে চারপুত্র রেখে তিনি প্রয়াত হয়েছেন। সম্ভবত বালিয়াটি প্রাসাদ তাদের দ্বারাই নির্মিত হয়। ৫.৮৮ একর জমির উপর বিস্তৃত এই নিদর্শনটি বিভিন্ন পরিমাপ ও আকৃতির দু'শতাধিক কোঠা ধারণ করছে। উত্তর দিকে রয়েছে ছয়ঘাট বিশিষ্ট একটি পুকুর। এছাড়া ভেতরে রয়েছে সাতটি খণ্ডে বিভক্ত বিভিন্ন স্থাপনা, স্নানাগার, প্রক্ষালন কক্ষ প্রভৃতি। পুরো অংশের চারদিকের সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। দক্ষিণ প্রাচীরে পাশাপাশি একই ধরনের চারটি খিলান দরজা রয়েছে। প্রতিটির উপর রয়েছে একটি করে সিংহ। স্থাপনাসমূহের আকর্ষণীয় দিক হলাে সারিবদ্ধ বিশাল আকৃতির করিনথিয়ান থাম, লােহার বীম, ঢালাই লোহার পেঁচানাে সিঁড়ি, জানালায় রঙ্গিন কাচ, কক্ষের অভ্যন্তরে বিশাল আকৃতির। বেলজিয়াম আয়না, কারুকার্যখচিত দেয়াল ও মেঝে ঝাড়বাতি ইত্যাদি। বালিয়াটি প্রাসাদ বর্তমান সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক ১৯৬৮ সনের এন্টিকুইটিস অ্যাক্টের ১৪নং ধারা। (১৯৭৬ সনের সংশোধিত) এর আওতায় সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত হচ্ছে। পশ্চিম দিক থেকে দ্বিতীয় স্থাপনাটির দ্বিতল একটি অংশে জাদুঘরে সংগৃহীত বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে।
কিভাবে যাবেন : যারা বাজেট ট্যুর করতে চান তাদের জন্য ঢাকার যে কোনো যায়গা থেকে গাবতলি বাস টার্মিনাল এ যাবেন। সেখান থেকে লোকাল বাসে করে (এস.বি. লিংক) সাটুরিয়া যাবেন ভাড়া জনপ্রতি ৭৫টাকা করে নিবে। সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এ নেমে অটোরিকশা পাবেন বালিয়াটি জমিদার বাড়ি পর্যন্ত জনপ্রতি ১০টাকা ভাড়া নিবে। জমিদার বাড়ি প্রবেশ টিকেটের মূল্য ২০টাকা। বালিয়াটি দেখা শেষ হলে যাবেন পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি। এখানে সি.এন.জি পাবেন পাকুটিয়া পর্যন্ত জনপ্রতি ২০টাকা ভাড়ায়। পাকুটিয়া জমিদার বাড়িতে প্রবেশের কোনো টিকেট নেই। পাকুটিয়া ঘোরাঘুরি শেষে সি.এন.জি যোগে সাটুরিয়া যেতে ২৫টাকা ভাড়া নিবে, সেখান থেকে আবার এস.বি. লিংকে করে ঢাকার পথে রওনা হবেন। আবার যদি চান তাহলে সাটুরিয়া থেকে নাহার গার্ডেন ঘুরে আসতে পারেন সি.এন.জি ভাড়া নিবে ২৫টাকা জনপ্রতি। তখন নাহার গার্ডেন থেকে গোলড়া হয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করবেন।
0 Response to "ঘুরে আসুন মানিকগঞ্জ জেলা অন্তরগত বালিয়াটি ও পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি: একদিনের ট্যুর প্লান। গ্রেটটেকি ডটকম। "
Post a Comment